সমুদ্র উত্তাল, আটকা ১২ লাখ টনের পণ্যবাহী জাহাজ

সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য স্থানান্তর পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার থেকে টানা চার দিন কাজ বন্ধ থাকায় সাগরে আমদানীকৃত পণ্যবাহী জাহাজের সারি ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। আর জাহাজ অলস বসে থাকায় ক্ষতির বোঝা বাড়ছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে আসা জাহাজে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক আছে।

কিন্তু জোয়ার ও জলাবদ্ধতার কারণে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি অনেক কমেছে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ৬৩টি পণ্যবাহী জাহাজ আছে। এসব জাহাজে পাঁচ লাখ টন খাদ্যপণ্য, সাত লাখ টন শিল্পের কাঁচামাল আছে। এর মধ্যে ছয়টি খাদ্যপণ্য, তিনটি চিনি, একটি লবণ, সাতটি তেলের জাহাজ, ১৯টি খোলা পণ্যবাহী জাহাজে আছে সিমেন্টশিল্পের কাঁচামাল, পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য।

বিদেশ থেকে আসার পর বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে স্থানান্তর (লাইটার) করে সেগুলো চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর পাশে গড়ে ওঠা ১৬টি ঘাটে নামানো হতো। আর কিছু জাহাজ বহির্নোঙর থেকে নৌপথে চলে যেত দেশের বিভিন্ন ঘাটে। সেই কাজ পুরোপুরি বন্ধ আছে।

জানতে চাইলে শিপ হ্যান্ডলিং, বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম সামশুজ্জামান রাসেল বলেন, তিন দিন ধরে বহির্নোঙরে লাইটারিং পুরোপুরি বন্ধ আছে।

এর আগে তিন দিন বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কাজ চললেও এখন সেটি হচ্ছে না। সাগর উত্তাল থাকায় আরো তিন দিন এমন অবস্থা থাকতে পারে।

তিনি বলেন, প্রকৃতির ওপর তো কারো হাত নেই। কিন্তু সাগর যত দিন শান্ত না হবে, তত দিন জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ শুরু হবে না। এই বসে থাকার জন্য জাহাজভেদে ৮ থেকে ১২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতি গুনতে হবে জাহাজ পরিচালনাকারীদের। যদিও সেই ক্ষতি শেষ পর্যন্ত পণ্যের দামের সঙ্গেই যোগ হবে।

জানা গেছে, টানা বৃষ্টির মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে পণ্যবাহী জাহাজ আসা-যাওয়া স্বাভাবিক ছিল। এর মধ্যে জেটিতে থাকা কনটেইনার জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানামাও স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু খোলা পণ্যবাহী জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটে। সেই সঙ্গে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারিও কমেছে।

চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, জেটিতে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক আছে। বহির্নোঙর থেকে জেটিতে পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়াও স্বাভাবিক, কিন্তু বহির্নোঙরে পণ্য লাইটারিং বন্ধ আছে। বন্দর থেকে বের হতে গিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে পণ্য ডেলিভারিও কমেছে।