উদ্বোধনের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে এখনও চালু হয়নি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি ইউনিয়নে নির্মিত ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসাসেবা। ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেবাকেন্দ্রে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকার পরও চালু না হওয়ায় সেবা বঞ্চিত এলাকার প্রায় ৩ লাখেরও বেশি মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, চুনতি ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটির আশপাশে রয়েছে উপজেলার চুনতি, বড়হাতিয়া, পুটিবিলা ও লামার আজিজনগর ইউনিয়ন। তিন লাখেরও অধিক মানুষের বসাবাস এসব ইউনিয়নে। রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব প্রয়াত মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বীরবিক্রম তার গ্রাম চুনতিতে ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেন। ২০১৯ সালের ৪ জুলাই তিনি ভবন নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ শেষে ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে কেন্দ্রটি এখনও চালু হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আনোয়ার কামাল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এলাকার সন্তান মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন বীরবিক্রম বেঁচে থাকলে হয়তো এত দিনে এখানে চিকিৎসাসেবা চালু হয়ে যেত। এখন তো এটি দেখার কেউ নেই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কেন্দ্রটি চালু হওয়ার আগেই ভবনটি নষ্ট হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রিদোয়ানা ফেরদৌসী বলেন, ‘বাড়ির পাশে হাসপাতালটি হওয়ায় আনন্দিত হয়েছিলাম, তবে এটি এখনও চালু হয়নি। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা চালু হলে আমাদের আর দূরে গিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে হতো
না।’
চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, হাসপাতাল নির্মিত হওয়ার পরও চালু না হওয়ায় শিশু ও প্রসূতিদের জরুরি প্রয়োজনে লোহাগাড়া সদর অথবা পদুয়ায় নিয়ে যেতে হয়। এতে এলাকার দরিদ্র মানুষকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। তা ছাড়া রাস্তার দুরবস্থার কারণে প্রসূতি ও জটিল রোগীদের নিয়ে যাওয়াও দুরূহ।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুনা আক্তার বলেন, ‘জনবল সংকটে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটি চালু করা যাচ্ছে না। আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লোকবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য চিঠি লিখেছি।’