বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের পতেঙ্গা অংশ থেকে আনোয়ারা অংশে যেতে সময় লাগবে মাত্র ৩ মিনিট। নির্ধারিত ৬০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালালে এই ৩ মিনিটে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়া যাবে।
সঙ্গে টির উদ্ধোধন উপলক্ষে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার গাড়িবহর নিয়ে পরিদর্শনে যায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রশাসন। পরিদর্শন শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আগামীকাল ২৮ অক্টোবর টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে সেতু কর্তৃপক্ষ, সেতু বিভাগ এবং প্রশাসন মিলে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এখন শুধু অপেক্ষা উদ্বোধনের। এ টানেল শুধু কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়কে সংযুক্ত করেনি, প্রধানমন্ত্রীর ওয়ান সিটি টু টাউনের যে কনসেপ্ট সেটিকেও বাস্তবায়িত করেছে। এই টানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সড়ক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে।”
তিনি বলেন, ‘টানেলের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যরাও। টানেলে ১০০টিরও বেশি অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ৫ মিনিটের মধ্যেই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই এই টানেলের ব্যবস্থাপনা করা হবে। স্থানীয় পুলিশের পাশাপাশি কোস্টগার্ড থাকবে এলাকায়। সেই সঙ্গে থাকবে ট্যুরিষ্ট পুলিশ।
এ সময় জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু টানেলের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে ১০০টিরও বেশি সিসি নামের বানান। তবেগ নির্ধারণ করা হয়েছে উরু কিলোমিটার।”
২০১৬ সালে চীনের রাষ্ট্রপতি সি জিন পিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ২০১৯ সালে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার বছর সাত মাসে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শেষ হয়েছে বিশাল এই উন্নয়নযজ্ঞ। নদীর তলদেশে মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। পাশাপাশি সংযুক্ত করা হয়েছে দুটি টিউব। টানেলের বাইরে অ্যাপ্রোচ সড়ক থাকছে প্রায় ৫ কিলোমিটার।
টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে সিএমপির নির্দেশনা টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) নির্দেশনা দিয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তি হিসেবে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, টানেল উদ্বোধনের দিন ভিভিআইপি ও ভিআইপিরা চট্টগ্রাম বিমানবন্দর এবং টানেল ও সি বিচ এলাকায় সড়কপথে চলাচল করবেন। ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নিরাপত্তা ও সড়কপথে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আগামীকাল ২৮ অক্টোবর ভোর ৫টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ থাকবে। এসব নির্দেশনা ও বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে সিমেন্ট ক্রসিং কাটগড় হয়ে কোনো যানবাহন সি বিচ বা এয়ারপোর্টে যেতে পারবে না।
এয়ারপোর্টগামী সব যাত্রীকে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বাম দিকে মোড় নিয়ে বোট ক্লাব হয়ে এয়ারপোর্টে যেতে হবে। বিমানবন্দর মোড় ক্রস করে বাটার ফ্লাই পার্ক হয়ে টানেল ও সি বিচ এলাকায় যাওয়া যাবে না। ফৌজদারহাট আউটার লিংক রোডে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। সর্বসাধারণের সুবিধার্থে বন্দরগামী যানবাহন আউটার লিংক রোড পরিহার করে সিটি গেট, একে খান, সাগরিকা রোড ক্রসিং, বড়পোল নিমতলা হয়ে চলাচল করবে। আজ ২৭ অক্টোবর ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কেউ সি বিচ এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না।