রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকাসহ সারা দেশে স্বাভাবিক হয়নি ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা। ইন্টারনেট সেবাদাতাদের এক অপারেটর আরেকজন অপারেটরকে সাহায়তার মাধ্যমে ঢাকা শহরের ইন্টারনেট ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ঢাকার বাইরে সংযোগের উন্নতি হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খাজা টাওয়ারে আগুন লাগে।
এর পর থেকে মোবাইলে কল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যায় পড়েছে অনেক গ্রাহক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ইমো ও ইউটিউব ব্যবহারেও বিপত্তি দেখা দিয়েছে।
মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোবাইল অপারেটরদের একে অন্যের মধ্যে ভয়েস কলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ওই ভবনে ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) থাকার কারণে এমনটি হচ্ছে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের-আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘খাজা টাওয়ারে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য ইউটিলিটি না পাওয়ায় সেখান থেকে সার্ভার অন্যত্র স্থানান্তর করে চালু করা হয়েছে। আমাদের কেবলগুলো নতুন ডাটা সেন্টারে যুক্ত করতে যাচ্ছে। এতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
গুগল-ফেসবুকসহ অন্য সেবা একবার ডাউন হলে তা স্বাভাবিক হতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়।
এই কারণে ধীরগতি পাওয়া যাচ্ছে। আশাকরি রাতের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।’ পল্টনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা সীমিত করার কোনো নির্দেশনা আইএসপি কম্পানিগুলোকে দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
পল্টনে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত রাজধানীর পল্টন এলাকায় থ্রিজি ও ফোরজি সেবায় বিঘ্ন ঘটছে। সকাল থেকেই নয়াপল্টন এলাকায় ইন্টারনেটের গতি না পাওয়ার কথা জানাচ্ছেন সংবাদকর্মীরা।
ছবি বা ভিডিও ধারণ করে সমাবেশস্থল থেকে দূরে কোথাও গিয়ে সেগুলো অফিসে পাঠাতে হচ্ছে। তবে সেখানে সেবা বন্ধের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)।
বিটিআরসির কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দিইনি।’
জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আইএসবিএবির পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে, তাদের যে সমস্যা ছিল তা ৯৫ শতাংশ সমাধান হয়েছে। দুটি আইআইজির (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) কাজ নিয়ে যেটুকু সমস্যা আছে সেটুকুও শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে। আমি আশাকরি দুই-এক দিনের মধ্যে এটা সমাধান হয়ে যাবে।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘পল্টনে যে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো আছে, সেটা হয়তো ১০ হাজার লোকের জন্য। ওখানে ৫০ হাজার লোক এনে হাজির করলে ভয়েস কল ও ইন্টারনেটে চাপ পড়বেই। এতে কল ড্রপ হবে, ইন্টারনেটের গতি পাওয়া যাবে না—এটাই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে আমরা কোনো নির্দেশনা দিইনি। আমরা ইন্টারনেট দিতে চাই, এই সেবার প্রসার করতে চাই। ইন্টারনেট সীমিত করে সরকারের লাভ কি?’