সৈকতের আকাশে রঙ-বেরঙের ঘুড়ির মেলা, মুগ্ধ পর্যটক

কক্সবাজারে সাতদিনের পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল ঘিরে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছে পর্যটকেরা। পাশাপাশি কার্নিভালের নানা ইভেন্ট স্থানীয়দের বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে। সৈকতের আকাশে উড়লো বাঘ, সিংহ, ঈগল, ইলিশ, মাছরাঙাসহ নানা প্রজাতির প্রাণী অবয়বে তৈরি রঙ-বেরঙের ঘুড়ি।

রবিবার(১ অক্টোবর) পর্যটন মেলার পঞ্চম দিনের আয়োজনে ঘুড়ি উৎসব ছিল অন্যতম।

এদিন সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টে শতাধিক ঘুড়ি উড়ানোর আয়োজন করে জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার।

সেই ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়িয়েছি। আজ ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে অনেক স্মৃতিকথা মনে পড়ে গেলো। মনে হচ্ছে আমিই আকাশে উড়ছি।

 পর্যটক ফারদিনা বাশার।

ঢাকা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ৮ জন বন্ধুসহ কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজিব আহমেদ। আগেও তারা কক্সবাজারে এসেছিলেন। কিন্তু এবার তাদের ভ্রমণে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল। রোববার রাতে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে মেলা মঞ্চে চলছিল জনপ্রিয় ব্যান্ড আভাস আর্মির পরিবেশনা। এরপর আগে ঢাকঢোল ও গানে গানে আলো ছড়ান কুদ্দুস বৈয়াতি। এখানে দেখা মিললো ওই আট বন্ধুর।

Kites colour Cox's Bazar sky! - Bangladesh Post

রাজিব আহমেদ বলেন, প্রতি বছর আমরা দু’বার ভ্রমণে যাই। আমাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে কক্সবাজার। সমুদ্রের গর্জন আমাদের সবসময় কাছে টানে। তাই এবারও সমুদ্র শহরে আসলাম। ঢাকায় থাকতেই পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভালের কথা শুনি। এখানে এসেই তাই কার্নিভালের জমজমাট আয়োজন মিস করিনি।

 টাইগার ঘুড়িটি বেছে নিয়ে আকাশে উড়ালাম। ছোটদের সঙ্গে ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ছেলেবেলায় হারিয়ে গেলাম। জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগটি ভালো লেগেছে।

তাহসিন আলম।

এদিকে পর্যটকের পাশাপাশি স্থানীয়রাও প্রতিদিন মেলায় ভিড় করছেন। বিকেল গড়ালেই জমে উঠে দুই শতাধিক স্টল। এতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে ব্যবসা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

বিখ্যাত রাজা চা বিক্রেতা রাজা বাবু বলেন, গতবারের পর্যটন মেলা থেকে কক্সবাজারে আমার যাত্রা শুরু। এই এক বছরে আমি এখানকার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছি। আজীবন আমি মানুষের ভালবাসা নিয়ে থাকতে চাই। এবার মেলায় পর্যটক ও স্থানীয়দের ভাল সাড়া পাচ্ছি।

সৈকতের আকাশে রঙ-বেরঙের ঘুড়ির মেলা, মুগ্ধ পর্যটক

শহরের টেকপাড়া থেকে পর্যটন মেলা দেখতে এসেছেন সায়মা আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, এখানে এসে আমরা অভিভূত। পরিবারের সঙ্গে মেলায় এসে বেশকিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছি। এ ধরণের আয়োজনের জন্য আয়োজকেরা প্রশংসার দাবিদার।

পর্যটন মেলা কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মেলার বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে ঘুড়ি উৎসবও একটি অংশ। এছাড়াও সাতদিনের মেলায় রয়েছে সমুদ্রের উন্মুক্ত মঞ্চে সার্কাস প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি, রোড শো, ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, ফানুস উৎসব, সার্ফিং প্রদর্শনী, বিচ ম্যারাথন, বিচ ভলিবলসহ নানা আয়োজন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, পর্যটনের জন্য কক্সবাজার সারাদেশের ব্র্যান্ড। আমরা চেষ্টা করছি পরিকল্পিত উদ্যোগের মাধ্যমে কক্সবাজারকে বিশ্ব মাঝে প্রমোট করার। আশা করছি এই মেলা ও কার্নিভাল সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।