
চড়া দামের খোলস ভেঙে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে ডিম। আড়তদারদের পাকা খাতার হিসাব অন্তত তাই-ই বলছে। তাদের দাবি, গত ৫ দিনে ডজনে ১২ টাকার বেশি কমে আড়তেই নেমেছে সরকার নির্ধারিত খামার মূল্যের চেয়ে কমে। তবে এই দাম কমতির তেমন সুফল পাচ্ছেন না খুচরা ক্রেতারা। কারণ, খুচরা বাজারে এখনও চড়া ডিমের দাম।
আড়তে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।
প্রতি পিস লাল ডিমের দাম খামারে সাড়ে ১০ আর খুচরায় হবে সর্বোচ্চ ১২ টাকা। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এটিই ডিমের যৌক্তিক মূল্য।
প্রতি পিস ডিমের সরকার নির্ধারিত দাম ১২ টাকা।
আড়তদারদের পাকা খাতার পাতায় পাতায় দেখা গেল, ১ নভেম্বর যে ডিম বিক্রি হয়েছে ১১ টাকায়, ৫ দিনে সেই ডিমের দাম নেমেছে ৯ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১০ টাকায়। তবে, সে হিসাবে খুচরা বাজারে কমছে না দাবি করে এক আড়তদার বলেন, প্রতিদিনই ডিমের দাম কমছে। ডিমের উৎপাদন বেশি। কিন্তু বেচাবিক্রি কম।
এবিষয়ে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন,
এক সপ্তাহ আগেও প্রতি ১০০ পিস ডিমের দাম ১ হাজার ১৭০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৮০ টাকা ছিল। দাম কমতে কমতে আজকে (৬ নভেম্বর) পর্যন্ত প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ১০ পয়সা থেকে শুরু করে ৯ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত দামে আড়তে বিক্রি হয়েছে।
কিন্তু দাম বৃদ্ধির হাত বদলের দিকে তাকাতেই মিলছে খুচরায় দাম বাড়িয়ে বিক্রির কারসাজি। কয়েকজন বিক্রেতা একই আড়তে বসে ১০০ ডিমের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন ১০ টাকা করে। তবে তারাও জানালেন, চাহিদা কমায় লাগাতার ডিমের দাম কমছে।
রোববার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আমদানি করা ডিমের প্রথম চালান দেশে এসেছে।
এক বিক্রেতা বলেন, ‘প্রতিদিনই প্রতি ১০০ ডিমের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা করে কমছে। আড়তদার থেকে কিনে আমরা শতকরা ১০ টাকা লাভে বিক্রি করছি।’
এরপর পাশের কারওয়ানবাজারে এসে বিক্রেতাদের কাছে জানা গেছে, তারাও কমিয়ে বিক্রি করছেন, যদিও তা এখনও থেকে যাচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের বেশিতে।
এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, লাল ডিমের ডজন ১৪০ টাকা আর সাদা ডিম ১৩৫ টাকা। ডিমের দাম অনেক কমে গেছে। আগের তুলনায় ডিমের দাম অনেক কম। এখন আমরা ৫০ টাকা হালি দরে ডিম বিক্রি করছি।
আরেক বিক্রেতা বলেন, খুচরা বাজারে প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা। গত এক সপ্তাহ যাবত এই দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাত্র ৫ দিনে ১০০ ডিমে ১২০ থেকে ২০০ টাকা কমার খবরে বাজারে আসা ক্রেতারা জানালেন, তারা কিনে যাচ্ছেন সেই বাড়তি দামেই।
এবিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে এক ক্রেতা বলেন,
বাজার কে নিয়ন্ত্রণ করে বলেন? সুতরাং, বাজারে যদি প্রতি পিস ডিম ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়, তাহলে আমরা ১০০ টাকা দরেই কিনতে বাধ্য। শুনেছি, আড়তে ডিমের দাম কমেছে। সে হিসাবে এখানেও তো দাম কমার কথা। কিন্তু তা তো দেখছি না।
তবে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদারের দাবি, ক্রেতার কপালে দাম কমতির সুফল মিলুক বা না মিলুক, প্রান্তিক খামারিদের লোকসানের পাল্লা ভারি হচ্ছে ঠিকই। তিনি বলেন, ‘এখন তো খামারিদের লোকসান গুণতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কাজ করা উচিত।’
অন্যদিকে রোববার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আমদানি করা ডিমের প্রথম চালান দেশে ঢুকলেও তা এসে পৌঁছেনি রাজধানীর বাজারে।