এবার বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর ইঙ্গিত দিল ফিচ

বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং বা ঋণমান অপরিবর্তিত রেখে ভবিষ্যতের জন্য আভাস বা আউটলুক ‘নেতিবাচক’ ক্যাটেগরিতে নামিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ। এর আগে সংস্থাটির রেটিংয়ে আউটলুক ‘স্থিতিশীল’ ছিল। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বিবেচনায় ফিচ রেটিং এজেন্সি এ পরিবর্তন এনেছে। গত জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আরেক রেটিং এজেন্সি এসঅ্যান্ডপি বাংলাদেশের ঋণমান ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ ক্যাটেগরিতে নামিয়ে আনে। এর আগে মে মাসে আরেক এজেন্সি মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান কমায়।

কোনো দেশের ক্রেডিট রেটিং বিনিয়োগকারীদের সে দেশের সম্ভাবনা ও ঝুঁকি সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়। ঋণমান হলো কোনো দেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতার মানদণ্ড। তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ ‘সভরেন ক্রেডিট’ রেটিং নিয়ে থাকে।

ফিচ গত সোমবার হংকং থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংস্থাটি দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ করেছে। আর বাংলাদেশের বর্তমান রেটিং ‘বিবি মাইনাস’ অব্যাহত রেখেছে। ফিচ মনে করছে, বাংলাদেশের বর্তমান বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। ভালো জিডিপি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের ঋণ এর সমজাতীয় দেশগুলোর চেয়ে কম রয়েছে।

ফিচ ধারণা করছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুন শেষে আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। চলতি বছরের ৯ মাসে রিজার্ভ ১৯ শতাংশ কমে ২১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নামতে পারে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন এরকমই। চলতি বছর শেষে রিজার্ভের পরিমাণ তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান থাকতে পারে। ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে তা ২ দশমিক ৬ মাসে নামতে পারে।

ফিচ বলেছে, ঝুঁকি মোকাবিলায় মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণের পদ্ধতি পরিবর্তনসহ বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে বৈদেশিমক মুদ্রার রিজার্ভের পতন ঠেকানো যায়নি বা বাজারে ডলারে সংকট মেটানো যায়নি। সংস্থাটি আরও বলেছে, ২০২৪-২৫ সাল পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা পূরণের সক্ষমতা অর্জন করা উচিত। কেননা, বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপি অনুপাত এখনও অনেক কম। রাজস্ব আয় বাড়ানো, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠাসহ কিছু পরামর্শ দিয়েছে ফিচ।